অন্তখণ্ড
পঞ্চম তরঙ্গ
বন্দনা
জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রী বৈষ্ণব দাস জয় গৌরী দাস।।
জয় শ্রী স্বরূপ দাস পঞ্চ সহোদর।
পতিত পাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রী গোলোকচন্দ্র জয় শ্রী লোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দময়।।

(জয় শ্রীসুধন্যচাঁদ সভ্যভামাত্মজ।

প্রেমানন্দে হরি গুরু শ্রীপতিচাঁদ ভজ।।)

জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।

 

দি্‌গ্বিজয়ীর দিব্য জ্ঞান লাভ

পয়ার

ঠাকুরের লীলার প্রারম্ভে একদিন।

উপনীত হ’ল এক ব্রাহ্মণ প্রবীণ।।

শ্রীঅদ্বৈত নাম ধারী শান্তিপুরবাসী।

সংকীর্তন প্রিয় হরি পদ অভিলাষী।।

অদ্বৈত বংশেতে কৈল জনম গ্রহণ।

বহুদিন করিলেন বিদ্যা অধ্যায়ন।।

ন্যায়, স্মৃতি, পাতঞ্জল, দর্শন, বেদাঙ্গ।

বেদান্ত, সংহিতা, গীতা, করেছেন সাঙ্গ।।

সর্ববিদ্যা বিশারদ জ্ঞানী চূড়ামণি।

মহা মহোপাধ্যায় বিজ্ঞান রত্ন খনি।।

যেখানে যেখানে মহা বিদ্বৎ মণ্ডলী।

সর্বস্থানে মহামান্য দিগ্বিজয়ী বলি।।

সর্ব দেশ জয় করি মামুদপুর গায়।

দৈব যোগে শিষ্য বাড়ী হলেন উদয়।।

তথা শিষ্য শ্রীযুক্ত গোবিন্দচন্দ্র শর্মা।

তস্যানুজ তারিণীচরণ দেবশর্মা।।

তথায় করেন গিয়া বিদ্যা আলোচনা।

মহাকবি বলিয়া বলিল সর্বজনা।।

সর্বদেশ জয় করি স্বদেশে চলিল।

বহুলোক মুখে জন প্রবাদ শুনিল।।

ওঢ়াকাঁদি শ্রীহরি ঠাকুর নামধারী।

নমঃশূদ্র কুলে জন্ম সাক্ষাত শ্রীহরি।।

লেখা না জানেন তিনি পড়া না জানেন।

বড় বড় পণ্ডিতকে পরাস্ত করেন।।

মহা মহা পণ্ডিত তথা আসেন যাহারা।

দু’এক কথার পর পরাস্ত তাহারা।।

আপনি পণ্ডিত শ্রেষ্ঠ তাতে দিগ্বিজয়।

দিগ্বিজয় বলা যায় তথা হ’লে জয়।।

শুনিয়া পণ্ডিত শ্রেষ্ঠ ঈষৎ হাসিল।

যাব কিনা যাব চিত্তে ভাবিতে লাগিল।।

শুনি ঠাকুরের নাই লেখা পড়া জানা।

কেমনে করিব তথা বিদ্যা আলোচনা।।

যাক বেশী কথা দিয়া নাহি প্রয়োজন।

শব্দে শুনি করে যাই ঠাকুর দর্শন।।

এত বলি বাহকেরে অনুমতি দিল।

ঠাকুর দেখিব তুমি ওঢ়াকাঁদি চল।।

ওঢ়াকাঁদি ঘাটে নৌকা লাগিল যখন।

শ্রীঠাকুর বহির্বাটী এলেন তখন।।

মৃত্তিকা আসন করি বসেছেন হরি।

আজানুলম্বিত ভুজ একাম্বরধারী।।

সুদৃশ্য কবরী পৃষ্ঠ পরে লম্বমান।

কর্ণায়ত চক্ষু দু’টি ঠেকিয়াছে কান।।

দিগ্বিজয় পণ্ডিত যখনে তথা এল।

অনিমিষ নেত্রে একদৃষ্টে চেয়ে রৈল।।

অভাব্য ভাবনা মত ধীরে ধীরে কয়।

চেনা চেনা লাগে যেন দেখেছি কোথায়।।

ভাব দেশে মহা প্রভু বলিলেন বাণী।

তুমিও আমাকে  চিন আমি তোমা চিনি।।

সর্বদিকে ফিরে ঘুরে কর দিগ্বিজয়।

নিজেকে কি জিনেছ পণ্ডিত মহাশয়।।

ঘরের রমণী দু’টি নিতান্ত প্রখরা।

পরজিনে হ’য়েছ নিজ ঘর জয়ী করা।।

এতক্ষণে দিগ্বিজয় দাঁড়াইয়া ছিল।

এই বাক্য শুনা মাত্র মাটিতে বসিল।।

পদের তালুকতা মাত্র মৃত্তিকা স্পর্শিল।

অনাসনে পাছা উঁচু করিয়া বসিল।।

মহাপ্রভু বলে এত বিষম বিপাক।

মিশামিশি হবে কেন এত রৈল ফাঁক।।

শুভ্র বস্ত্র দিগ্বিজয় পরিধান ছিল।

ঠাকুর নিকটে তবু মাটিতে বসিল।।

ঠাকুর বলিল অই রয়েছে আসন।

দয়া করি দ্বিজবর করুণ গ্রহণ।।

দিগ্বিজয় বলিল আসনে কার্য নাই।

আমাকে চিনেন কিসে বলেন গোঁসাই।।

মহাপ্রভু বলে আমি ছিনু নদীয়ায়।

চেন কিনা চেন আমি শচীর তনয়।।

তুমি দিগ্বিজয় ছিলে কেশব কাশ্মীরী।

আমি সেই বালক নিমাই গৌর হরি।।

দিগ্বিজয় করিতে আসিলে মম স্থানে।

পরাজিত হয়েছিলে করে দেখ মনে।।

ভুল পড়েছিল তব গঙ্গা স্তোত্র শ্লোকে।

শ্রুতিধর হয়ে আমি সুধাই তোমাকে।।

সেইকালে তোমা আমা আছে দেখা চেনা।

স্মৃতি পড়িয়াছ কৈ স্মৃতিত থাকে না।।

এই বাক্য বলা মাত্র পূর্বস্মৃতি হৈল।

মূর্ছাগত হ’য়ে দ্বিজ চরণে পড়িল।।

সেই তুমি, তুমি সেই, আমি দিগ্বিজয়।

তুমি প্রভু সর্বেশ্বর শচীর তনয়।।

অদোষ দরশি তুমি বিষ্ণুপ্রিয়া কান্ত।

কত দোষে দোষী আমি নাহি তার অন্ত।।

অবোধ্য তোমার লীলা বুঝে সাধ্য কার।

বিধি হর হারে আর মানব কি ছার।।

ঘরের রমণী দু’টি একান্ত চঞ্চলা।

দেশ ত্যাগী সৈতে নারি নারীদের জ্বালা।।

প্রভু বলে যাহ তবে নিজ ঘরে যাহ।

আমার এ কথা গিয়ে মাতাদিগে কহ।।

অবলা সরলা হবে চঞ্চলা রবে না।

ক্ষান্ত হও আর দিগ্বিজয় করিও না।।

জিতেন্দ্রিয় যেই জন সেই জন শূর। (সুর)

গরবত্ব গৌরবত্ব সব কর দূর।।

এত শুনি দিগ্বিজয় নিজালয় গেল।

ঠাকুরের বাক্য ঠাকুরানীকে জানাল।।

শুনিয়া রমণীদ্বয় হইল সরলা।

শান্তি সুখে ঘর করে নাহি কোন জ্বালা।।

উদ্দেশ্য স্তবন করে দ্বিজ দিগ্বিজয়।

যা ইচ্ছা করিতে পার তুমি ইচ্ছাময়।।

অল্পবিদ্যা জেনে আমি করি দিগ্বিজয়।

দিগ্বিজয় তুচ্ছ কথা তুমি সর্বজয়।।

ইচ্ছাময় সর্বজয় কত স্তুতি কৈল।

শ্রীধামেতে শেষে দ্বিজ পত্র লিখেছিল।।

পূর্বজন্মে ভারতী দিলেন মোরে বর।

তিনি থাকিবেন মম কণ্ঠের উপর।।

তব কাছে পরাস্ত হইয়া দুঃখান্তরে।

দেবীপূজা না করিয়া থাকি অনাহারে।।

নিশাযোগে দেবী মম শিয়রে বসিয়া।

বলিলেন অনাহারী আছ কি লাগিয়া।।

বলিলাম তুমি মোরে দিয়েছিল বর।

পরাজিত না হইব কাহার গোচর।।

তবে কেন হৈল হেন বুঝিয়া না পাই।

হারিলাম ক্ষুদ্র এক বালকের ঠাই।।

দেবী বলে হেন বর কাকে দিনু আমি।

তোর কাছে পরাজিত হবে মোর স্বামী।।

নবরূপে হয়ে ছিলে নবদ্বীপবাসী।

এ লীলায় জন্ম নিলে ওঢ়াকাঁদি আসি।।

তুমি বিদ্যানাথ দেব ভারতীর পতি।

দেহ বর চিরদিন পদে থাকে মতি।।

হৃদয় রঞ্জন তুমি শচীর নিমাই।

এই রূপ পত্র লিখে দিল প্রভু ঠাই।।

 

*শ্রী শ্রী হরিচাঁদের কৃষ্ণরূপ ধারণ

পয়ার

শ্রীকমল দাস নাম বৈরাগী ঠাকুর।

পরম বৈষ্ণব তিনি ভক্তি সে প্রচুর।।

ভক্তিভাবে করিতেন শ্রীকৃষ্ণ ভজন।

বৃন্দাবনে যাবে বলে করিল গমন।।

রাস পূর্ণিমার অগ্রে যাত্রা যে করিল।

যাত্রী নাহি সঙ্গে নিল একেলা চলিল।।

বিশুদ্ধ বৈষ্ণব সাধু তনু প্রেমে মাখা।

সর্বদাই হৃদিমাঝে ভাবে ভঙ্গি বাঁকা।।

রাধারাণী কর দয়া মোরে এইবার।

ব্রজে গিয়ে দেখি যেন শ্যাম নটবর।।

জয় রাধে বলরে মন জয় রাধে বল।

অন্য বোল মুখে নাই শুধু এই বোল।।

সে কমল পীতবাসে ভাবিতে ভাবিতে।

বৃন্দাবনে যাত্রা করে মনের সুখেতে।।

এ সময় হরিচাঁদ সফলাডাঙ্গায়।

ধান্য কাটিবারে হরি মাঠ মধ্যে যায়।।

যে জমিতে হরিচাঁদ ধান্য বুনেছিল।

কৃষাণ লইয়া হরি সে জমিতে গেল।।

বিশ্বনাথ নাটু আর ব্রজকে লইয়া।

সেই ধান্য কাটিলেন প্রভু মাঠে গিয়া।।

ধান্য কাটে আটি বাঁধে মনের হরিষে।

কেহ কাটে কেহ বাঁধে কেহ আছে বসে।।

এই মত কৃষাণেরা কর্ম করিতেছে।

আইল উপরে হরি দাঁড়াইয়া আছে।।

পূর্বমুখ হ’য়ে হরি আছে দাঁড়াইয়া।

আসিল কমল দাস সেই পথ দিয়া।।

প্রভুর নিকটে যবে আসিল বৈরাগী।

শ্রীহরির রূপ দেখি হইল অনুরাগী।।

প্রভুপানে চেয়ে থাকে কমল তখন।

অপরূপ রূপ তিনি করেন দরশন।।

পরিধান পীতবাস যেন কাল শশী।

ত্রিভঙ্গ ভঙ্গিমা বাঁকা হাতে আছে বাঁশী।।

বনমালা গলে দোলে বক্ষদেশ ঢাকা।

চরণে চরণ দিয়ে হ’য়ে আছে বাঁকা।।

মস্তকেতে শিখি পাখা শ্রীপদে নুপুর।

এইমত রূপে আছে শ্রীহরি ঠাকুর।।

দাঁড়াইয়া আছে হরি আইল উপরে।

সে কমল সাক্ষাতে এইরূপ হেরে।।

হইল কমল দাস জ্ঞানশূন্য প্রায়।

বাহ্য স্মৃতি হারাইয়া অনিমেষে রয়।।

দণ্ডবৎ হ’য়ে শেষে পদধূলা নিল।

পদরজ সে বৈরাগী মস্তকে মাখিল।।

মস্তকেতে নিল আর অঙ্গেতে মাখিল।

যোড়হস্তে কেন্দে কেন্দে বলিতে লাগিল।।

শ্রীহরি বলিল তুমি কহ মহাশয়।

কিবা হেতু কোথা যাবে দেও পরিচয়।।

কমল বলিল মোর কালামৃধা বাস।

বৃন্দাবনে যাব আমি মনে অভিলাষ।।

হরিচাঁদ তারে বলে যাও তবে তুমি।

কমল বলিল আর নাহি যাব আমি।।

প্রভু বলে যাইতেছ তুমি বৃন্দাবন।

এবে তুমি নাহি যাবে বল কি কারণ।।

সে বলিল নাহি যাব আর বৃন্দাবন।

বৃন্দাবনচন্দ্র আমি করিনু দর্শন।।

বৃন্দাবনে যাব আমি যাহার লাগিয়া।

সেই কৃষ্ণ দেখি আমি নয়ন ভরিয়া।।

কমলের অশ্রুজলে বক্ষ যে ভাসিল।

করযোড়ে দাঁড়াইয়া স্তব আরম্ভিল।।

 

*লঘু-ত্রিপদী

শ্যাম নটবর                নবীন কিশোর

তুমিত ব্রজের হরি।

পীতবাস গলে              বনমালা দোলে

চরণে নুপুর হেরি।।

করেতে বাঁশরী             মুকুন্দ মুরারী

ত্রিভঙ্গ বঙ্কিম বাঁকা।

কিরূপ দেখালে             আমাকে ভুলালে

মস্তকে ময়ূর পাখা।।

তুমি কাল শশী            মৃদু মৃদু হাসি

তুমি গোবর্ধনধারী।

পুতুনা নাশন               কালীয়া দমন

বকাসুর বধকারী।।

দাবাগ্নি মোক্ষণ            চরাতে গোধন

বিধাতার দর্পহারী।

ননী চুরি কর               বাঁধে তব কর

যশোমতি ক্রোধকরি।।

বসন হরিলে               যমুনার কূলে

তুমিত রসিক মণি।

নিস্কাম স্বভাব              ব্রজগোপী সব

তোমাকে খাওয়াত ননী।।

রাখালের সনে             ভ্রম বনে বনে

তুমিত রাখাল রাজা।

শ্রীমতির সনে              গিয়া নিধু বনে

কালীরূপে খাও পূজা।

রাসলীলা করি             লইয়া কিশোরী

করিলে রসের খেলা।

আমাকে ভুলালে                    সে রূপ দেখালে

তুমিত চিকন কালা।।

মনে বাঞ্ছা করি            যাব ব্রজপুরী

দেখিব দেখিব যারে।

ব্রজে না যাইব             তব দাস হ’ব

দেশেতে যাব না ফিরে।।

তুমি সেই জন             মদন মোহন

ভাগ্যেতে দর্শন ঘটে।

কমল কাঁদিয়া              বক্ষ ভাসাইয়া

পাদপরে মাথা কুটে।।

শুনিয়া ক্রন্দন              বলেন তখন 

হরিচাঁদ দয়াময়।

রাখিব তোমারে            আমার আগারে

নাহিক তোমার ভয়।।

কমলের আশা             মিটিল পিপাসা

পেয়ে সে কমল আঁখি।

হরিচাঁদ মোর              করুণা সাগর

অধমে দিওনা ফাঁকি।।

 

*শ্রীশ্রীহরিচাঁদ পদতলে রামচাঁদের পদ্মফুল দর্শন

পয়ার

ওঢ়াকাঁদি নিবাসী চৌধুরী রামচাঁদ।

যিনি হন হরিচাঁদ নিত্য পারিষদ।।

একদিন রামচাঁদ হরিচাঁদ ল’য়ে।

আসিলেন নিজালয় উল্লাসিত হ’য়ে।।

আগে যায় হরিচাঁদ রামচাঁদ পিছে।

প্রেমানন্দে রামচাঁদ শ্রীপদ হেরিছে।।

প্রতিক্ষণ রামচাঁদ হেরিবারে পায়।

যেই স্থানে হরিচাঁদ শ্রীপদ রাখয়।।

প্রস্ফুটিত শতদল উদ্ভব তথায়।

পুনঃ প্রভু পা’ তুলিলে লয় হ’য়ে যায়।।

রামচাঁদ বলে প্রভু একি অপরূপ।

বুঝিতে না পারি কিছু তোমার স্বরূপ।।

তব পদতলে পদ্ম উদ্ভব হইয়া।

উঠাইতে পদ পুনঃ যায় মিলাইয়া।।

হরিচাঁদ বলে রাম এইরূপ হয়।

আসি যবে ভবে, হয় নর ভাগ্যদয়।।

যাই চলি আপনার মন মত স্থানে।

লোকে বলে হরি এসেছিল এ ভুবনে।।

পদ তলে দেখ যত পদ্মের উদয়।

আসি যবে, তবে এই ধরা ধন্য হয়।।

রামচাঁদ বলে হরি তোমার মহিমা।

নরের কি সাধ্য কেবা দিতে পারে সীমা।।

একদিন সফলানগরী গ্রাম হ’তে।

গিয়াছিল শ্রীহরি রামচাঁদ বাড়ীতে।।

একে ভাদ্র মাস দেশে ডেকেছিল বান।

তরী বিনে জল পথে করিল প্রয়াণ।।

নক্র পৃষ্ঠে হরিচাঁদ করিল গমন।

শ্রীদেবী করুণা তাহা করিলা দর্শন।।

জগত নিয়ন্তা হরি অগতির গতি।

চরণ পূজিতে তব, দাসে দেহ মতি।।

 

শ্রীধামে মহালীলার গুপ্ত অভিসার।

পয়ার

একদা শ্রীহরিচাঁদ বসিয়া নির্জনে।

কি যেন কি ভাবিলেন আপনার মনে।।

আর কত কাল আমি থাকিব ধরায়।

হ’ল বুঝি মম লীলা সাঙ্গের সময়।।

অতএব এক কর্ম করিবারে হয়।

ভাবি কালে সেই মেলা দেখিবে সবায়।।

মধুকৃষ্ণাত্রয়োদশী শুভ বুধবার।

সেই বুধবারে হ’ল জনম আমার।।

অপ্রকাশ র’ল তাহা ধরণী মাঝারে।

না করিয়া সেই কর্ম যাই কী প্রকারে।।

গুপ্তভাবে করিব বারুণীর অভিসার।

গুরুচাঁদ হ’তে পরে হইবে প্রচার।।

এত ভাবি নিশিকালে একাকী চলিল।

চটকা গাছের তলে গিয়া বসি র’ল।।

হরিচাঁদ ভক্তা ভবানী আর শোভনা।

(এক লাইন গ্যাপ)

গোপনে দূর হতে এই ভাব দেখিলা।

অপরূপ কাণ্ড তারা দেখিতে পাইলা।।

চারিদিকে যেন মহা জ্যোতির্ময় হ’ল।

(এক লাইন গ্যাপ)

যেন কত অগণিত মতুয়ার দল।

দলে দলে আসিতেছে বলে হরি বল।।

জয়ডঙ্কা ঝাঁঝ কাঁসি খোল করতাল।

বাজাইয়া মতোগণে বলে হরি বল।।

বাদ্যোদ্দমে প্রকম্পিত যেন ভূমিতল।

মেঘের মণ্ডলে যেন দেবের বাদল।।

হরি বল রব বিনে অন্য বোল নাই।

কেহ কেহ দেয় হরিচাঁদের দোঁহাই।।

মিলেছে চাঁদের মেলা না হয় তুলনা।

হুলুধ্বনি যেন দেয় বহুত ললনা।।

সুসজ্জিত হ’য়ে কত যেন দেবগণ।

প্রভুর পার্শ্বেতে বসি করেছে স্তবন।।

হরিনাম ধ্বনি হেন উঠেছে গগনে।

দেব বালাগণ এল নরবালা সনে।।

বসিয়ে করেছে তারা কীর্তন শ্রবণ।

কাহারো বা বারিধারা হতেছে পতন।।

কেহ বা কীর্তন মাঝে দিতেছে হুঙ্কার।

প্রেমের পাথারে সবে দিতেছে সাঁতার।।

এসব দর্শন করি করেছে চিন্তন।

ঘুমিয়ে রয়েছে এবে দাদারা দুজন।।

এত ভাবি অন্তঃপুরে করিয়া গমন।

মাতৃ পাশে জানাইল সব বিবরণ।।

দুই ভাই এল পরে তাহাদের সঙ্গে।

এই মেলা দরশন করে মনরঙ্গে।।

গুরুচাঁদ স্থির চিত্তে করে দরশন।

অপরূপ মেলা হেরি সবিস্মিত মন।।

মেলা হেরি মনে মনে করেছে চিন্তন।

এ মেলা করে পিতা কি জানি কি কারণ।।

তার মাঝে হেরে যেন শ্রীহরি মন্দির।

নেহারিয়া সেই সব চিত্ত হয় স্থির।।

ক্ষীরোদশায়ীর মূর্তি শ্রীমন্দির মাঝে।

আরো কত মূর্তিশোভে অপরূপ সাঁজে।।

পার্শ্ব দেশে ঘোড়া দৌড় হইতেছে তথা।

তাই হেরে উমাকান্তের হয় অস্থিরতা।।

ধরিয়া ঘোটক এক আনে প্রভু ঠাই।

বলে বাবা এই ঘোড়া রাখিবার চাই।।

ঠাকুর বলেন ঘোড়া রাখা নাহি যায়।

দৈবে দেবতার ঘোড়া বাধ্য নাহি হয়।।

হরিচাঁদ বলে শুন শ্রীগুরু চরণ।

হেতা হতে চল, করি গৃহেতে গমন।।

এত বলি পিতা পুত্র তথা হতে এল।

মেলা অবসান তথা অন্ধকার হল।।

সেই হতে গুরুচাঁদ ভাবে মনে মনে।

এই মেলা সুপ্রকাশ হবে কত দিনে।।

দেব নরে একসঙ্গে করিবে কীর্তন।

প্রেমাবেশে মত্ত হবে যত ভক্তগণ।।

কবে বা উড়িবে হরি নামের নিশান।

নেহারিয়া সেই মেলা জুড়াইব প্রাণ।।

ঘাটে মাঠে কবে হবে নাম সংকীর্তন।

কবে আমি হেনভাব করিব দর্শন।।

প্রবাহিত হবে কবে প্রেমের পয়োধি।

প্রেম হিল্লোলে ধুয়ে যাবে যত বেদবিধি।।

দলে দলে মতুয়ারা করিবে কীর্তন।

প্রেমভরে উলু দেবে যত বামাগণ।।

বহিবে প্রেমের বন্যা সম্মুখে আমার।

ভক্তসঙ্গে মন রঙ্গে খেলিব সাঁতার।।

অন্তরে মাধুর্যভাব ক্রমেই বাড়িল।

হরিগুরুচাঁদ প্রীতে হরি হরি বল।।

 

ভক্ত আনন্দ সরকারের উপাখ্যান।

পয়ার

পরগণে খড়রিয়া দুর্গাপুর গ্রাম।

ভকত আনন্দ নামে অতি গুণধাম।।

রামায়ণ গানে যেন দ্বিতীয় বাল্মিকি।

পরম বৈষ্ণব তত্ত্বজ্ঞানী সদা সুখী।।

নমঃশূদ্র কুলজাত খ্যাত সরকার।

প্রামাণিক মণ্ডল গাইন আখ্যা আর।।

কেহ কহে কীর্তনিয়া কেহ অধিকারী।

সর্বগুণী সর্বকার্যে সর্ব অধিকারী।।

কবিগানে বঙ্গদেশে যশ চরাচর।

রচক গায়ক হেন পিক কণ্ঠস্বর।।

ওঢ়াকাঁদি হরিচাঁদে জগন্নাথ মানে।

তেতুলের গোলা খায় ব্যাধির বিধানে।।

ওঢ়াকাঁদি প্রেম বন্যা উঠিল তুফান।

পঞ্চকাঁটা ভেঙ্গে চুরে ধায় প্রেমবান।।

ব্রাহ্মণ কায়স্থ শূদ্র বৈরাগী যাহারা।

কৌপীন ছিণ্ডে সব ভক্ত হ’ল তাহারা।।

হাতিখাদা গ্রামবাসী তিলক বণিক।

নারীসহ মাতোয়ারা পরম নৈষ্ঠিক।।

মল্লকাঁদি রামতনু শিরালী ছিলেন।

ওঢ়াকাঁদি গিয়ে পুত্র প্রাপ্ত হইলেন।।

মহাপ্রভু হরিচাঁদ দিয়াছিল বর।

প্রাচীন বয়সে দোঁহে পাইল কুমার।।

অপুত্রক আনন্দ অন্তরে দুঃখ পায়।

পুত্রের কামনা করি ওঢ়াকাঁদি যায়।।

পথে এক ম্লেচ্ছ বলে যেতেছ কোথায়।

আনন্দ বলিল যাব ওঢ়াকাঁদি গায়।।

ম্লেচ্ছ শুনে তুচ্ছ করে বলে গালি পাড়ি।

খেতে নাহি দেয় শালা যাও তার বাড়ী।

ওঢ়াকাঁদি গেলে ডেকে বলে ভগবান।

পথে লোকে শালা বলে তুই এলি কেন।।

তাহা শুনি আনন্দ লুটিয়া পড়ে পায়।

পয়ার প্রবন্ধে কবি তারক রচয়।।

 

জাত মৃতপুত্রের জীবন দান।

পয়ার

যবে আনন্দের বংশে পুত্র নাহি হয়।

মেঝো ভ্রাতা হীরামন নামে যেই রয়।।

তার গৃহে জনমিল একটি নন্দন।

গর্ভস্রাব যন্ত্রণাতে ত্যজিল জীবন।।

সে আনন্দ নিরানন্দ শুনে শ্রুতি মূলে।

দিয়ে পুত্র ওহে হরি কেন হরি নিলে।।

আনন্দের মাতা সতী আয়ুবতী নামে।

খোলায় ভাজিল নাড়ী জীব দিব কামে।।

শুনিয়া আনন্দ ওঢ়াকাঁদি মুখ হ’য়ে।

উচ্চৈঃস্বরে হরিচাঁদে শুধায় ডাকিয়ে।।

ওরে বাবা হরিচাঁদ ওঢ়াকাঁদি বাসী।

দুর্গতি বিনাশ কর দুর্গাপুর আসি।।

এক ডাক দুই ডাক তিন ডাক দিল।

ওঢ়াকাঁদি থেকে হরি কর্ণেতে শুনিল।।

ভক্ত বাক্য রাখিবারে আসিলেন আশু।

চেঁচায়ে উঠিল সদ্যজাত মৃত শিশু।।

অপার মহিমা প্রভু পূর্ণ অবতার।

প্রশস্থ গার্হস্থ্য ধর্ম এল শিখাবার।।

অবনীতে অবতীর্ণ ভব কর্ণধার।

করিলেন শেষ লীলা অতি চমৎকার।।

হরিবর আনন্দের হয় জ্যেষ্ঠ পুত্র।

অতঃপর তারকের হ’ল শিষ্য পুত্র।।

আনন্দ বলিল তারকের বরাবর।

তোমারে দিলাম মম পুত্র হরিবর।।

ভক্তিভাবে যেই করে এ লীলা শ্রবণ।

ধন ধান্য বিদ্যালাভ পায় পুত্র ধন।।

তারকের শিষ্য হরিবর তাহে হ’ল।

হরিচাঁদ প্রীতে সবে হরি হরি বল।।

মহানন্দ মহানন্দ এ গ্রন্থ রচনে।

দশরথ রসনা, রসনা ইহা ভনে।।

 

আনন্দের রাগাত্মিকা ভক্তি।

পয়ার

আনন্দের পুত্র হ’ল  আনন্দ অপার।

আনন্দ রাখিল তার নাম হরিবর।।

শ্রীহরির বরে জন্ম কি রাখিব নাম।

এ ছেলের রাখিলাম হরিবর নাম।।

তের মাস গর্ভবাস পড়ে হ’ল ছেলে।

ভাসিছে আনন্দ সুখ জলধির জলে।।

সবে বলে ধন্য ধন্য শ্রীহরি ঠাকুর।

অপুত্রক পুত্র লভে মহিমা প্রচুর।।

বারশত পচাত্তর সালের আষাঢ়।

তেরই তারিখ সিংহরাশি শুক্রবার।।

পুত্র লাভ করি হ’ল পরম আনন্দ।

ওঢ়াকাঁদি যাতায়াত করেন আনন্দ।।

পাশরিতে নারে গুণ দিবানিশি গায়।

নারী পুত্র সঙ্গ করি ওঢ়াকাঁদি যায়।।

পুত্রের বয়স হ’ল ছয় সাত মাস।

হরিবর নাম রাখি মনেতে উল্লাস।।

সাত মাসে ছেলের হইল ভাপিজ্বর।

তাহা দেখি আনন্দের চিন্তিত অন্তর।।

প্রাতঃকালে উঠিয়া গেল উড়িয়া নগর।

যখনেতে যাইয়া উঠিল বাড়ী পর।।

সবে বলে ঠাকুরের না পাইবে দেখা।

গৃহদ্বার রুদ্ধ করি রয়েছেন একা।।

ভয়েতে কেহ না যায় ঘরের দুয়ারে।

দ্বার খুলিবেন প্রভু সাত দিন পরে।।

আনন্দ বলিল আমি খুলিব এ দ্বার।

তাহা শুনি সবে মানা করে বার বার।।

যে ঘরেতে মহাপ্রভু দ্বার রুদ্ধ ক’রে।

হাঁটিয়া আনন্দ গেল সে ঘরের দ্বারে।।

দ্বার মুক্ত করিয়া যখন প্রণমিল।

ক্রোধে পরিপূর্ণ প্রভু কাঁপিতে লাগিল।।

ঘর দ্বার বাড়ী ঘর থর থর কাঁপে।

ভয়ে কেহ নাহি যায় প্রভুর সমীপে।।

প্রভু বলে তুই কেন দুয়ার খুলিলি।

যাহা আসে মুখে প্রভু করে গালাগালি।।

তাহা দেখি আনন্দ সে পড়িল ফাঁপরে।

বাক্য নাহি সরে গাত্র ভাসে নেত্রনীরে।।

ভাবে এই অপরাধে মোর নাহি মাপ।

ভয় করি ধরি করে গুরুমন্ত্র জপ।।

নয়ন মুদিয়া করে স্তব স্তুতি গান।

তাহাতে হইল তুষ্ট প্রভু ভগবান।।

বল কেন দরজা খুলিলি তাহা বল।

আমার দরজা খুলে কার এত বল।।

আনন্দ চরণপদ্মে পুনঃ প্রণমিল।

শ্রীপদের রজ নিতে হস্ত বাড়াইল।।

ধীরে ধীরে হাত বাড়াইল ভয় বাসী।

তাহা দেখি মহা প্রভু উঠিলেন হাসি।।

অন্তরে সন্তোষ বাহ্যে যেন কত রাগে।

বলে যে বলদা দ্বার রুদ্ধ কর আগে।।

আজ্ঞা লঙ্ঘনের ভয়ে দরজা ধরিল।

দরজাতে ঝাঁপখানা আড়ো ক’রে দিল।।

আনন্দ বসিল যে এমন জায়গায়।

ঝাঁপের উপর দিয়া মুখ  দেখা যায়।।

আনন্দের চাতুর্য বুঝিল হরিচাঁদ।

বলে বেটা কেবল পাতিস যত ফাঁদ।।

আনন্দ কাঁদিয়া বলে দিয়া ছিলে ছেলে।

হইয়াছে ভাপিজ্বর এসেছি তা বলে।।

ভাপিজ্বরে যদি মরে তোমার অখ্যাতি।

সে সংবাদ জানাইতে এসেছি সম্প্রতি।।

কেমনে সারিব জ্বর বলে দেহ তাই।

দয়াময় হরি আমি দেশে চলে যাই।।

প্রভু বলে কিছু বলিবারে পারিব না।

পুনর্বার সে আনন্দ আরম্ভিল কান্না।।

প্রভু বলে বলিলাম কিছু বলিব না।

মোরে দিয়ে তুই আজ কিছু বলাস না।।

প্রভু বলে আনন্দেরে দেখ মনে ভেবে।

তোর কথা রবে না আমার কথা রবে।।

আনন্দ বলিল মোর বিচারেতে হয়।

ভক্ত বাক্য ছাড়া তব বাক্য কবে রয়।।

তাহা শুনি মহাপ্রভু হাসিয়া উঠিল।

বলে তুই যা করিবি তাহা হবে ভাল।।

যাহা তোর মনে আসে তাহা গিয়া কর।

করা মাত্র সেরে যাবে তার ভাপি জ্বর।।

এর পূর্বে আনন্দ অপরে বনমালী।

জ্বর হ’য়ে প্লীহা হ’ল হইল দুর্বলী।।

একত্র হইয়া যায় ওঢ়াকাঁদি গায়।

শ্রীধামেতে দুই ভাই হইল উদয়।।

প্রণমিয়া পদতলে করে নিবেদন।

বলে প্রভু প্লীহা জ্বর কর বিমোচন।।

প্রভু বলে যদি আলি প্লীহা জ্বর হেতু।

কলা তিলযোগে খাস চালভাজা ছাতু।।

বনমালী স্বীকার করিল খা’ব তাই।

আনন্দ বলিল ওস্নান্ত নাহি খাই।।

ভোররাতে ছাতু খেতে আমি পারিব না।

প্রভু বলে তবে তোর প্লীহা সারিবে না।।

কাঁদিয়া আনন্দ তবে ধরে প্রভু পায়।

বলিলে মুখের কথা ব্যাধি সেরে যায়।।

তথাপি করুণাময় কর প্রতারণা।

(এক লাইন গ্যাপ)

রোগ হেতু তিলছাতু খেতে পারিব না।।

প্রভু বলে তবে তোর প্লীহা সারিবে না।

অমনি দিলেন হস্ত বাম কুক্ষি স্থানে।

(এক লাইন গ্যাপ)

প্রভু কন কই তোর পেটে প্লীহা আছে।

বলা মাত্র অমনি সে প্লীহা গেল ঘুচে।।

আনন্দের মুখপরে দিল এক ঠোকনা।

সেরে গেল প্লীহাজ্বর পেটের বেদনা।।

বনমালীর প্লীহা সাড়ে খেয়ে তিল ছাতু।

আনন্দের প্লীহা সারে প্রভু দয়া হেতু।।

অপার মহিমা প্রভু দীন দয়াময়।

পতিত পাবন হেতু অবতীর্ণ হয়।।

হরি হরি হরি হরি নাম কর সার।

পয়ার প্রবন্ধে কহে কবি গুণাকর।।

 

আনন্দের প্রতি স্বপ্নাদেশ।

পয়ার

ওঢ়াকাঁদি যাতায়াত করেন আনন্দ।

পরিবারসহ হরি নামে প্রেমানন্দ।।

অহরহ হরিনাম করে মহামতি।

ক্রমে ধনে জনে তার হইল উন্নতি।।

শয়নে স্বপনে চিন্তা বাবা হরিচাঁদ।

রোগ শোক নাহি চিত্তে পরম আহ্লাদ।।

একদিন আনন্দ শুয়ে আছে ঘরে।

স্বপনে দেখিল প্রভু শ্রীহরি ঠাকুরে।।

আনন্দ বলিল হরি করি নিবেদন।

পূর্ব জন্মে আপনি ছিলেন কোনজন।।

প্রভু বলে তাহা কেহ বলিবারে পারে।

যেই পারে কেহ কি মানুষ বলে তারে।।

আনন্দ বলিল প্রভু অনেকেই পারে।

দয়া করি বল নাহি ভাণ্ডিও মোরে।।

প্রভু বলে কে ছিলাম তাহা নাহি মনে।

তবে একদিন আমি কুরুক্ষেত্র  রণে।।

অর্জুনের সারথি ছিলাম যে সময়।

হনু বলে প্রভু আর সহ্য নাহি হয়।।

যদি আজ্ঞা করিতেন প্রভু ভগবান।

একটানে ফেলাতাম কর্ণের রথ খান।।

ফেলাতাম চারিশত যোজনের দূরে।

একব্বার যদি আজ্ঞা করিতেন মোরে।।

এত বলি মহাপ্রভু উঠিল তখন।

আনন্দের নিদ্রাভঙ্গ উঠিল তপন।।

হেনকালে শুনিলেন মহাপ্রভু যিনি।

নরলীলা সম্বরণ করেছেন তিনি।।

সে আনন্দ নিরানন্দ কথা নাহি মুখে।

জনমের মত দেখা দিলেন আমাকে।।

শুনিয়া কাতর হ’ল ভকত সমাজ।

গোলোক আদেশে কহে কবি রসরাজ।।


0 comments:

Post a Comment

 
Top